বাঁশখালী গন্ডামারা বড়ঘোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত স্মরণসভা পর্ষদের উদ্যোগে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সদ্য প্রয়াত বাবু ননী কুমার দে’র স্মরণ সভা ১১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তার নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গণ্ডামারা বড়ঘোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাপ্তাহিক পূর্বধারা পত্রিকার সম্পাদক স্মরণসভা পর্ষদের সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডাক্তার প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, মুখ্য আলোচক ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রাবন্ধিক ও সংগঠক চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেপি নুরুল মোহাম্মদ কাদের।

নাপোড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এর সাবেক প্রধান শিক্ষক বিমল কান্তি গুহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রয়াত মানিক কুমার দে’র বর্ণাঢ্য শিক্ষাজীবনের স্মৃতি চারণ করেন গন্ডামারা বড়ঘোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক অবিনাশ চন্দ্র দেব, স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং এরিস্টোক্রেটের প্রেসিডেন্ট লায়ন আতাউর রহমান চৌধুরী রুবেল।
পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল আনুষ্ঠানিকতা। গীতা পাঠ করেন বাপ্পি সরকার। এ সময় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, কালিপুর এজহারুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোঃ রমিজ উদ্দিন, গণ্ডামারা বড়ঘোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মাওলানা মো: হুসাইন, স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সহকারী শিক্ষক এডিএম শহিদুল আমিন চৌধুরী, রায়ছটা প্রেমাশিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম,স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সীমা সুশীল প্রমূখ।
উল্লেখ্য : বাবু ননী কুমার দে ১১ জানুয়ারি ১৯৬৫ সালে
বাঁশখালী উপজেলা পুকুরিয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড হাজী গাও এলাকার রেখা বাপের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শ্রী মৃত ব্রজ হরি দে ও মাতা নিম বালা দে’র একমাত্র সন্তান। সাগর তীরবর্তী উপকূলীয় এলাকা ৯ নং গন্ডামারা ইউনিয়নের অন্তর্গত প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ গন্ডামারা বড়ঘোনা উচ্চ বিদ্যালয়ে সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রবীণ গুনি শিক্ষক বাবু ননী কুমার দে’ ১৯৮৫ সালে শিক্ষকতা নামক মহান পেশায় যোগদান করে সহকারী শিক্ষক হিসেবে সুদীর্ঘ ৪০ বছর ওই বিদ্যালয়ে পাঠদান করান। চলিত বছরের ১১ জানুয়ারি,শিক্ষকতা পেশা হতে অবসর গ্রহণ করেন। গত মাসের ২৬ আগস্ট বুধবার ২০২৫ দুপুর ১২.৩০ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে পরলোক গমন করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর ডাক্তার প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, প্রয়াত শিক্ষকের সততা, নিষ্ঠা এবং নিবেদিত কাজ করার প্রাণ শক্তি শিক্ষার্থীদের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেম জাগ্রত করার ক্ষেত্রে আদর্শ শিক্ষকের ভূমিকা স্মরণ করা জরুরি। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আয়োজনে আজকের স্মরণসভা প্রমাণ করে প্রয়াত ননী কুমার দে নিঃসন্দেহে একজন ভালো মানুষ ছিলেন।
মুখ্য আলোচক নুরুল মুহাম্মদ কাদের বলেন, প্রতিটি মানুষ তাঁর কর্মেই বেঁচে থাকে। সরলতা ও ব্যক্তিত্ব মানুষকে কখনো মরতে দেয় না। মৃত্যুর পরও মানুষ তার কর্ম থেকে উপকৃত হয়। শিক্ষক বাবু ননী কুমার দে’র তেমনই একজন ব্যক্তি। তিনি একজন বিশিষ্ট শিক্ষকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শিক্ষার্থীদের পিতৃতুল্য অভিভাবক। একজন আর্দশ শিক্ষকের যেসব গুণাবলী থাকা দরকার তার সবই স্বর্গীয় বাবু ননী কুমার দে’র মাঝে ছিলো। তাঁর শূন্যাতা সহজে পূরণ হবেনা। মহৎ কর্মগুলোর কারণে তাঁর পরকালের জীবন সুখী হবে। মহৎ কর্মগুলোর কারণে তাঁদের পরকালের জীবন সুখী হবে।
স্মরণ সভায় বক্তারা প্রয়াত শিক্ষক বাবু ননী কুমার দে’র কর্মময় জীবনের উপর স্মৃতিচারণ করে বলেন, আদর্শ শিক্ষকের কখনও মৃত্যু হয় না। তাঁর সততা, দক্ষতা, যোগ্যতা, দেশপ্রেম, ত্যাগের মহিমা ও নৈতিকতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনোজগতে অমরত্বের বীজ বপন করে গেছেন। তিনি একজন আদর্শবান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের শুধু স্বপ্নই নয়, স্বপ্ন পূরণের পথ বাতলে দিতেন এবং সঠিক রাস্তা দেখাতেন।
স্বর্গীয় বাবু ননী কুমার দে’র বিদেহী আত্মার সদগতি কামনায় সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন বক্তারা।
এ সময় বাঁশখালীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্মরণসভার বিশেষ অতিথি গণ্ডামারা বড়ঘোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও নোয়াখালী চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ওয়ারেন্ট অফিসার ও স্মরণসভা পর্ষদের আহ্বায়ক এটিএম রুহুল আমিন চৌধুরী সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায় খুদে বার্তায় স্মরণ সভার সফলতা কামনা করার পাশাপাশি প্রয়াত ননী কুমার দে’ র সদগতি কামনা করেন।












