রবিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মানবতাবিরোধী অপরাধ

রায়ের বিরুদ্ধে যেভাবে আপিল করতে পারবেন শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যার মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সাথে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের আদেশও দেওয়া হয়েছে।

চার মাস সাত দিনের বিচার কার্যক্রম শেষে আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) দেওয়া এই রায়ে আরেক আসামি মামুনকে রাজসাক্ষী হওয়ায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় এটি এখনো শেষ ধাপ নয়—এর সামনে রয়েছে আরো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

আইন অনুযায়ী পরবর্তী ধাপ হচ্ছে আপিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ অনুসারে, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে যেকোনো দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করতে পারেন। একইভাবে রাষ্ট্র বা অভিযোগকারী পক্ষও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে।

তবে দণ্ডপ্রাপ্তরা কীভাবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন—সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা যায়। চিফ প্রসিকিউটর বলেন—আপিল করতে হলে তাকে দেশে এসে আত্মসমর্পণ করতে হবে। জেলে গিয়েই কেবল সুপ্রিম কোর্টে আপিল দাখিল করা সম্ভব।

আইন অনুযায়ী, আত্মসমর্পণ বা গ্রেপ্তারের পর আসামিপক্ষ ট্রাইব্যুনালের বিচারপদ্ধতির ত্রুটি, অসংগতি বা প্রমাণ উপস্থাপনায় ভুল-ত্রুটি তুলে ধরে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের সুযোগ পাবেন। রায়ের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল দায়ের করতে হয় এবং ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে।

আপিলের পর রয়েছে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা আবেদন)—যা বিচার প্রক্রিয়ার শেষ আইনি ধাপ। এখানেও আসামি আপিল রায়ের আইনি ত্রুটি বা ভুল ব্যাখ্যা তুলে ধরতে পারেন। রিভিউতে আগেও দণ্ড পরিবর্তন বা খালাস পাওয়ার নজির রয়েছে।

এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি দণ্ড কমানো, স্থগিত বা মওকুফ করতে পারেন।

শেয়ার করুন