করোনাকালিন বিপর্যয়ে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল যে অসামান্য অবদান রেখেছেন তা আমি জীবনে ভুলতে পারবোনা। বিশ্বের সবচেয়ে non-political সেবা সংগঠন লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল আমি একজন লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনালের সদস্য, আমরা সমাজের বিভিন্ন আঙ্গিকে কাজ করি, কোন মানুষ বিপদে পড়লে তার সাহায্যার্থে এগিয়ে আসি, মহান আল্লাহ পাক আমাদেরকে কিছুটা সৌভাগ্যবান করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। যারা কম সৌভাগ্যবান ব্যক্তি আমরা সবসময় তাঁদের পাশেই দাঁড়াতে চায়। মৃত্যুর পরে আমরা কিছুই নিয়ে যাব না শুধু নিয়ে যাবো মানুষের দোয়া। মা ও শিশুু হাসপাতালে সময়ের প্রেক্ষিতে নতুন নতুন সেবা যোগ হচ্ছে তাতেই আমি অভিভূত।
২৬ ফেব্রুয়ারি-২২ ইংরেজি (শনিবার )চমাশিহায় চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগে নতুনভাবে ক্যামিক্যাল পিলিং ডিপার্টমেন্টের সেবার শুভ উদ্বোধন প্রাক্কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাক্তন লায়ন জেলা গভর্নর কামরুন মালেক উপরোক্ত মন্তব্য গুলো করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মা ও শিশু হাসপাতালে জেনারেল সেক্রেটারি আলহাজ্ব মোঃ রেজাউল করিম আজাদ। তিনি বলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল স্বাস্থ্য সেবার বাতিঘর। বর্তমানে অনেকগুলো সেবার সাথে একটি ক্যান্সার হাসপাতালের নির্মাণাধীন কাজ চলমান রয়েছে তাঁতে আনুমানিক ব্যয় হবে ১২০ কোটি টাকা।সমাজের বিত্তবানরা যদি জনগণের অর্থে পরিচালিত হাসপাতালে সহযোগিতার হাত বাড়ান ২০২৩ সালের মধ্যে ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে পারবেন।
হাসপাতালে পরিচালনা পর্ষদের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর এম এ তাহের খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি আবিদা মুস্তাফা, চট্টগ্রাম লেডিস ক্লাবের সাধারন সম্পাদিকা বোরহান কবীর, চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ফতেমা ইসলাম লিজা, হাসপাতালে পরিচালনা পর্ষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোঃ মোরশেদ হোসেন, আব্দুল মান্নান রানা ও ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জাবেদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন হাসপাতালে জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি ডাক্তার কামরুন্নাহার দস্তগীর,জয়েন্ট ট্রেজারার এস এম কুতুবউদ্দিন, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মোঃ সাগির,কার্যকরী পরিষদের ডোনার মেম্বার ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী, সদস্য প্রফেসর ডাক্তার কামরুন্নেসা রুনা, এসএম জাফর হাসপাতালের পরিচালক প্রশাসন ডাক্তার নুরুল হক চমাশিহামেক উপাধ্যক্ষ ডাক্তার অসীম কুমার বড়ুয়া।
ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোঃ মোরশেদ হোসেন বলেন জনগণের অর্থ পরিচালিত হাসপাতালটির একাধিক সেবার সাথে আজকে আরেকটি নতুন সেবা যোগ হল।স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত পরিচালনা পর্ষদ নতুন নতুন সেবা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে ভবিষ্যতেও সবার সহযোগিতা পেলেই বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি একটি বড় প্রতিষ্ঠান রূপ নিবে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানা বলেন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল একটি পরিপূর্ণ হাসপাতালে পরিণত হতে যাচ্ছে, পরিচালনা পর্ষদের কর্মযোদ্ধাদের শতভাগ আন্তরিক প্রচেষ্টায় এসব উন্নয়ন হচ্ছে।সবার সহযোগিতায় আর আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলেই শারীরিক রূপ চর্চার পাশাপাশি ভবিষ্যতে মানসিক বিভাগের উন্নয়নের দৃষ্টিগোচরের আহ্বান জানান।
অন্যদিকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাবেদ আবছার চৌধুরী বলেন উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে একই ছাদের নিচে বহুগুণ সেবা দেয়ার প্রয়াসে চমাশিহায় চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগে সৌন্দর্য বর্ধন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কেমিক্যাল পিলিং সেবা একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা মাধ্যম।সারা বিশ্বে এখন চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞরাই ক্যমিকেল পিলিং এর মাধ্যমে এই সব সমস্যার সমাধান করেন। ডাক্তার নার্স আর সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলেই এই বিভাগটি অন্যান্য বিভাগের ন্যায় ভালো একটি ডিপার্টমেন্ট হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। একসাথে চট্টগ্রামের যেসব সুবিধা বঞ্চিত মানুষ এসকল সেবা থেকে বঞ্চিত তাঁরা নিঃসন্দে ভবিষ্যতে ভাল সেবা পাবে এবং স্বাস্থ্যসেবায় মাইলফলক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডাক্তার পারভেজ ইকবাল শরীফ, কার্যকরী পরিষদের সদস্য খায়েস আহমেদ ভূঁইয়া, মোহাম্মদ হারুন ইউসুফ হাসপাতালের উপ-পরিচালক প্রশাসন মোঃ মোশারফ হোসেন ও উপ-পরিচালক( মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স )ডাক্তার এ কে এম আশরাফুল করিমসহ হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের ডাক্তার ও নার্স কর্মকর্তা বিভাগীয় প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক হাসপাতালে যৌন ও চর্মরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার শামসুন্নাহার বিনতে মান্নান বলেন কোন বিউটি পার্লারে ত্বক ফর্সা কারি ক্রিম লাগিয়ে বিভিন্ন চর্মরোগ ও মুখের কালো দাগ,মেচতা, বয়সের ছাপ ও রোদে পোড়া দাগ দূর করার সম্ভব নয় একমাত্র বৈজ্ঞানিক উপায়ে এসব কেমিক্যাল পিলিং এর মাধ্যমে এসব রোধ করা সম্ভব। তিনি আরো বলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগে এই ক্যমিকেল পিলিং খুব কম খরচে করা হয় এবং চর্ম রোগের অন্যান্য সার্জারি ও খুব কম খরচে হয়ে থাকে।এই বিভাগটি ২০০২ সালে শুরু হলেও গত আট বছরে সবচেয়ে বেশি রোগীদের সেবা প্রদান করা হয়, প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ৯০জন এই বিভাগে থেকে সেবা গ্ৰহন করেন।
সংবাদটির পাঠক সংখ্যা : ২৬৭