শুক্রবার, ৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Add Your Heading Text Here

বিন্দু থেকে সিন্দু তৈরীর কারিগর প্যাসিফিক জিন্সের মালিক নাসির উদ্দিন আর নেই

Add Your Heading Text Here

Add Your Heading Text Here

চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান দেশের খ্যাতিমান শিল্পপতি বিশিষ্ট গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান, শিক্ষানুরাগী, দানবীর আলহাজ্ব মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন আর নেই।

পারিবারিক সূত্র জানাযায় ২৮ ফেব্রুয়ারি ২২ ইংরেজি সোমবার বাংলাদেশ সময় ৩:২০টায় থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন… ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

আগামী ২ মার্চ বুধবার সকালে থাইল্যান্ড থেকে বিমানে মরহুমের মরদেহ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আনা হবে।

পরে ওই দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম ইপিজেডে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বাদ যোহর জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বাদ আছর সীতাকুণ্ড সলিমপুরস্থ  নিজ বাড়িতে তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন আর বেঁচে নেই এমন সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহুর্তের মধ্যে তা ভাইরাল হয় এবং শোকের ছায়া নেমে আসে দেশ ও দেশের বাইরের চেনা-পরিচিত শুভাকাঙ্খীদের মাঝে।

শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর এম এ তাহের খাঁন, ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম মোরশেদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জাবেদ আবছার চৌধুরী, জেনারেল সেক্রেটারি আলহাজ্ব মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদ ও ট্রেজারার অধ্যক্ষ ডক্টর লায়ন মোঃ সানাউল্লাহ। চট্টগ্রাম  ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর জাহাঙ্গীর চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম শওকত হোসেন, আলহাজ্ব শাহজাদা মোঃ এনায়েত উল্লাহ খান ,আবিদা মুস্তাফা কাঞ্চন ও ট্রেজারার এস এম জাফর প্রমুখ।

এছাড়া অন্যান্যদের মাঝে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব জিয়াউল হক সুমন , ৩৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও মহানগর যুবলীগের সদস্য আবদুল আজিম ও বাঁশখালী গন্ডামারা ইউনিয়ন উন্নয়ন পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মোহাম্মদ নুরুল কাদের।

উল্লেখ্য তিনি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল  এবং চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের আজীবন সদস্য ও ডোনার মেম্বার  সহ অসংখ্য স্কুল কলেজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আজীবন সদস্য ছিলেন।
প্যাসিফিক জিন্সের গল্পটা রূপকথার মতো। ১৯৮৪ সালে মাত্র ২০০ শ্রমিক দিয়ে ছোট একটি কারখানা ছিল চট্টগ্রামে। নাম ছিল এনজেডএন ফ্যাশন। এক দশক পর চট্টগ্রাম ইপিজেডে প্যাসিফিক জিন্স নামে এটি নতুন রূপে পথচলা শুরু করে ১৯৯৪ সালে। তখন শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দেড় হাজার। কিন্তু এখন প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডে প্রত্যক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে ৩২ হাজার মানুষের। শুধু চট্টগ্রাম ইপিজেডেই এই গ্রুপের এখন ছয়টি কারখানা রয়েছে। ইপিজেডের বাইরে রয়েছে নিট পোশাকের আরেকটি কারখানা। ২০০০ সালে তারা নতুন করে যুক্ত করে ‘জিন্স ২০০০ নামে’ নতুন কারখানা। ২০০৮ সালে যুক্ত হয় আরেক কারখানা ‘ইউনিভার্সেল জিন্স’। ২০১৪ সালে উৎপাদনে যায় ‘এন এইচটি ফ্যাশন’। ২০১৮ সালে যুক্ত হয় ‘প্যাসেফিক ক্যাজুয়েলস’। ২০২১ সালে উৎপাদনে যায় আরেক নতুন কারখানা ‘প্যাসিফিক নিট্যাক্স’। তাদের নতুন আরও দুটি কারখানা উৎপাদনে যাবে শিগগির। এতদিন ওভেনে আধিপত্য বিস্তার করলেও এখন নিট পোশাকেও সেরা হতে চান তারা। আবার গার্মেন্টের বাইরে বিশ্ববিখ্যাত ম্যারিয়ট হোটেল চেইনের সঙ্গে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকায় পাঁচতারকা মানের একটি হোটেল নির্মাণ করছে প্যাসিফিক জিন্স।
৫০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে প্যাসিফিকের জিন্স :ডেনিম পোশাক রপ্তানির সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশের পাঁচ শতাধিক কারখানা থেকে প্রতিবছর ৪০০ মিলিয়ন পিস পোশাক রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে।
এর মধ্যে ইউরোপ, আমেরিকা, জাপানসহ ৫০টির বেশি দেশে এককভাবে ৪৫ মিলিয়ন পিস জিন্স প্যান্ট রপ্তানি করছে প্যাসিফিক জিন্স। সব মিলিয়ে দেশের শীর্ষ তিনটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের একটি চট্টগ্রামের এই প্রতিষ্ঠান। এটি এখন প্রতিবছর সাড়ে চার কোটি পিস ওভেন পোশাক উৎপাদন করছে। আর নিট পোশাক উৎপাদন করছে দেড় কোটি পিস।
নেপথ্যের নায়ক :প্যাসিফিক জিন্সকে বিন্দু থেকে সিন্ধুতে রূপান্তর করেছেন সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা মো. নাসির উদ্দিন।

শেয়ার করুন