মোঃ আব্দুল সামাদ বিশ্বাস, খুলনা থেকে।
“বদলে যাচ্ছে খুলনা শহরের প্রবেশদ্বার জিরো পয়েন্ট, নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ইন্টারসেকশন ” প্রায় (৩১কোটি) টাকা ব্যয়ে খুলনা নগরীর প্রবেশদ্বার জিরো পয়েন্টে (গোলচত্বরে) নির্মিত হচ্ছে ইন্টারসেকশন। সাথে থাকবে দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য ও পানির ফোয়ারা।
ভৌগলিক কারণে খুলনা নগরীর প্রবেশদ্বার জিরো পয়েন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল। খুলনা সিটির বাইপাস জাতীয় মহাসড়ক, (খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং রূপসা সেতুর এপ্রোচ সড়কের সংযোগস্থল এটি)। প্রতিনিয়ত এ সংযোগ সড়কগুলি দিয়ে জিরো পয়েন্ট ক্রস করে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে। দক্ষিণ অঞ্চলের সাথে যোগাযোগের স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর জিরো পয়েন্টের সংযোগ সড়কগুলি দিয়ে যানবাহন চলাচল দিনেদিনে বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। খুলনা বিভাগীয় শহর হওয়ার কারণে শহরের প্রবেশদ্বার হলেও জিরো পয়েন্টের সংযোগ সড়কগুলি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। যানবাহন চলাচলে এখানে নেই কোনো নিয়ম শৃঙ্খলা। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে গোলচত্বরের আশেপাশে কর্দমাক্ত হয়ে যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হতো।
খুলনা নগরীর প্রবেশদ্বার জিরো পয়েন্টে যানবাহন চলাচল সহজীকরণ, যানজট নিরসন, যানচলাচলে শৃঙ্খলা এবং পযঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে জিরো পয়েন্ট (গোলচত্বর) কে আধুনিকায়ন আকর্ষণীয় এবং দৃষ্টিনন্দন করার জন্য খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইন্টারসেকশন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
সওজ সূত্রে জানা যায, গত বছরের (২৮ ডিসেম্বর) বুধবার ২২ইং খুলনা সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী “মাহবুব ব্রাদার্স প্রাইভেট লিঃ” নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে ইন্টারসেকশন নির্মাণের কার্যাদেশ প্রদান করে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে (৩০ কোটি ৮৯ লক্ষ ৯২ হাজার ৪৭৮ টাকা)। কার্যাদেশ পাওয়ার পর কাজ শুরুর নির্ধারিত (৩ জানুয়ারি) ২৩ইং তারিখ থেকে উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারসেকশন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করে। (৮ মাসের মধ্যে) অর্থাৎ (২ সেপ্টেম্বরের) শনিবার ২৩ইং তারিখের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে।
জিরো পয়েন্টে ইন্টারসেকশের গোলচত্বরটি হবে ৭২ মিটার বৃত্তাকার। বড় বৃত্তাকারের মাঝখানে ছোট আর ১টি বৃত্তাকার হবে। দুই বৃত্তাকারের ভেতর দিয়ে ২১ মিটার প্রশস্ত ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে। ইন্টারসেকশন টি বর্তমান সড়কের লেভেল থেকে ২ ফুট উঁচু হবে। বৃত্তাকারের মাঝখানে স্থাপন করা হবে আধুনিক মেটালিক ভাস্কর্য, সাথে থাকবে দৃষ্টিনন্দন এবং আকর্ষণীয় পানির ফোয়ারা।
খুলনা সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ জানায়, আমাদের রোড সেফটি ডিভিশনের মাধ্যমে আমরা ইন্টারসেকশের ডিজাইন তৈরী করেছি এবং “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অভিজ্ঞ প্রফেসর এবং চারুকলা বিভাগের প্রফেসর দিয়ে ভাস্কর্যটির ডিজাইন তৈরী করেছি”। ইন্টাসেকশনটি নির্মিত হলে জিরোপয়েন্টের যানজট দূরীকরণসহ খুলনায় প্রবেশকালীন মানুষের এই নগরী সম্পর্কে সুন্দর একটা ধারণা জন্মাবে ইন্টার সেকশনের ডিজাইন তৈরী করার সময় এই জিনিষটা আমরা মাথায় রেখেছি।
কংক্রিটের ঢালাইকৃত সড়কের মাঝখানে ৩ ফুট ডিভাইডারের ভেতর বসানো থাকবে সোডিয়াম লাইট। (বৃত্তাকার থেকে আফিলগেট অভিমুখী সড়কটি ১৯৮ মিটার, রুপসা ব্রিজ অভিমুখী সড়কটি ৪৯ দশমিক ৫ মিটার, সাতক্ষীরা অভিমুখী সড়কটি ১০৮ দশমিক ৫ মিটার এবং ময়লাপোতা অভিমুখী সড়কটি ২৩ দশমিক ৫ মিটার পর্যন্ত রিজিড পেভমেন্ট বা আরসিসি ঢালাই রোড হবে)। এছাড়া জিরো পয়েন্টে নির্মিত বৃত্তাকার এবং ইন্টারসেকশনের সড়কগুলি মধ্যপ্রাচ্যের আদলে ঝকঝকে আলোকসজ্জায় রূপান্তরিত করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ আশরাফ আলী বলেন, যথাযথ মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ে ইন্টারসেকশন নির্মাণের সকল প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। আমরা আশা করি নির্ধাারিত সময়ের মধ্যে আমরা কাজটি শেষ করতে পারবো।