পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করা ঘূর্ণিঝড় মোখা এখন উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে আট নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
তবে বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার রাত ৯টা ১৫ মিনিটে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান।
তিনি জানান, এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সকাল ছয়টার মধ্যে কক্সবাজার উত্তর ও মায়ানমার অতিক্রম করতে পারে। সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও এর আশপাশের এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করবে। এ সংক্রান্ত সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনি, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা আট নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে আট থেকে ১২ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ নিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দুর্যোগ সতর্কতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ডিজাস্টার অ্যালার্ট অ্যান্ড কো–অর্ডিনেশন সিস্টেম (জিডিএসিএস)। সংস্থাটি এই মুহূর্তে বিশ্বে চলমান দুর্যোগগুলোর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখাকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
জিডিএসিএস হলো জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় কমিশনের একটি সহযোগিতা ফ্রেমওয়ার্ক। এটা বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ মোকাবিলায় তথ্য সহযোগিতা দিয়ে থাকে।
সংস্থাটির ওয়েবসাইটে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে এসব তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ সময় বাতাসের গতি সর্বোচ্চ ২০৪ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। আর ছয় ফুটের বেশি পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।