মুহাম্মদ মহিউদ্দিন , বিশেষ প্রতিবেদক :
বিদ্যুতের লোডশেটিং যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ জনজীবন। শহর কিংবা নগর সব জায়গায় একই চিত্র । নাগরির প্রতিটি ওয়ার্ড, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড গ্রামে সমানতালে চলছে লোডশেডিং। ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং এর কারণে চট্টগ্রাম মহানগর পরিণত হয়েছে ভুতের নগরী। গ্রামে বিদ্যুতের দেখা পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণের মতো। মহানগরীতে প্রত্যেকটি জায়গায় ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে অসুস্থ রোগী, শিশুরাও রাতে কিংবা দিনে একটানা পরিপূর্ণভাবে ঘুমাতে পারছে না। পবিত্র রমজানের সেহরি ও ইফতার কোন কিছুই লোডশেডিং থেকে বাদ পড়ছে না। গরমের অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করছে শহর এবং নগরের মানুষ। এই লোডশেডিং এর নাকাল থেকে কখন রক্ষা পাবে তা জানা নাই কারো। প্রতিদিন ‘ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ছয় থেকে সাতবার লোডশেডিং হচ্ছে। বন্দর নগরীর ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো: তাজউদ্দিন জানান, সারাদিন রোজা রেখে ইফতার ও সেহরীর সময়ও থাকছে না বিদ্যুৎ। একদিকে চৈত্র মাস শেষের প্রচণ্ড গরম অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকা এই দুই সংকটে মিলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পরিস্থিতি আরও খারাপ, সারাদিন মিলে বিদ্যুতের দেখা পাচ্ছেন না প্রায় সব কটি ইউনিয়নের মানুষ। গন্ডামারা ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল হোসেন সিকদার আবু জানান। বেশ কয়েকদিন যাবৎ আমাদের ইউনিয়নে বিদ্যুতের সমস্যা, গভীর নলকূপ থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় পানি তোলা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে ফলে এলাকার মানুষ সুপিয় পানি পান করতে পারছে না। সারাদিন বাইরে থাকার পর রাতে ঘরে আসলে গরমের অতিষ্ঠ যন্ত্রণায় দিনাতিপাত করছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভেরিফাইড ফেসবুকে একই ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাস্টার কফিল উদ্দিন হ্যাশটেক দিয়ে নিদারুন কষ্টের কথা লিখছেন অসহনীয় পর্যায়ে চলছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট!মানুষের কষ্টের শেষ নেই।#গন্ডামারা, এভাবে কফিল উদ্দিনের মত হাজার হাজার মানুষের মনের বেদনা একই রকম। বিদ্যুৎ বিভ্রাট চিত্র চাম্বল, শেখেরকিল, ছনুয়া,পুইছড়ী, উপজেলা সদর, সরল, রায়ছটা, খানখানাবাদ ,বাহারছড়া ও পুকুরিয়া সহ সবকটি ইউনিয়ন। খোঁজ নিয়ে এবং সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শুধু বাঁশখালী উপজেলা না মোটামোটি চট্রগ্রাম দঃ জেলার মধ্যে সব উপজেলার একই অবস্থা।বিশেষ করে কর্ণফুলী উপজেলার ১নং শিকলবাহা ইউনিয়ন, জুলধা ইউনিয়ন,, চরলক্ষ্মা ইউনিয়ন,,বড়উটান ইউনিয়ন,, চরপাথর ঘাঠা,, ইউনিয়ন এই পাঁচ ইউনিয়ন নিয়ে কর্ণফুলী উপজেলা ঘটিত এলাকায় মারাত্মক লোডশেডিং ।কয়েকদিন আগে কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টিপাতের কারণে কোন কোন এলাকা তিন দিন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিল। প্রবল বৃষ্টিপাতের সময় আবহাওয়া কিছুটা শীতল ছিল, কিন্তু এলাকাবাসী ছিল বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ও ছিল কিছু দিন।বিদ্যুতের সমস্যার বিষয় জানার জন্য পটিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা ব্যবস্থাপক (জিএম) এর মোবাইল ফোনে, একাধিকবার কল করা হলেও অপর প্রান্ত থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।এ রিপোর্ট লেখার সময় পটিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপ মহা ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মন্তব্য নেওয়ার জন্য বারে বার কল করা হলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বন্দর নগরীর নিউমুরিং বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শান্তনু বলেছেন, চাহিদার চেয়ে সরবরাহ পরিমাণ ঘাটতির কারণে লোডশেডিং পরিস্থিতি বাড়ছে।দেশের চার বিভাগের ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ। এর মাত্রা আরও বাড়তে পারে।
ইতিমধ্যে ঢাকাসহ চার বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।বুধবার (৩ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চলমান তাপপ্রবাহ পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।