মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম।।
বাঁশখালী আনোয়ারা উপকুল রক্ষার অনুমোদিত ৮৭৪ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার চলমান
মেগা প্রকল্পের টেন্ডার স্থাগিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ।
বিশাল প্রকল্পের বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেতে
পাচ্ছেন বাংলাদেশ নৌ-বাহিনি। মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত চুডান্ত হলেই প্রকল্পের কাজ বুঝে নিবে নেভী।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী আনোয়ারা টেকশয় বেড়িবাঁধ রক্ষা ও পানি ব্যবস্থপনা শীর্ষক প্রকল্পটি গত বছরে ২৮ মে
জাতীয় অর্থনেতিক পরিষদ (একনেক) সভায় অনুমোদিত হয়। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্ববদায়ক প্রকৌশলী খ. ম জুলফিকার তারেককে প্রকল্পের পরিচালক
পিডি হিসাবে নিয়োগ করা হয়।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিভাগ-২) ড. তানজির সাইফ সিটিনিউজটিভি২৪ কে বলেন আপাতত ওই
প্রকল্পের সকল কাজ স্থাগিত করা হয়েছে। এমন কি টেন্ডার বাতিলের নির্দেশনা ও আসতে পারে।
সরকারের যে কোন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় এবং কাজ করতে চাই। জেনেছি মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্তের আলোকে কাজটি নৌ- বাহিনীকে দেওয়া হবে। তবে এখনো চুড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
বাঁশখালী উপকূলীয় এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডে কাজের ত্রুটির কারনে কি অন্য সংস্থাকে কাজ দেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত পরিপ্রেক্ষিতে হচ্ছে। তবে যেসব জায়গায় ব্লক সরে গেছে ওইগুলো মূলত পরীক্ষায় বাতিল ব্লকগুলো অতিরিক্ত হিসেবে বেড়িবাঁধে ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলোর জন্য ঠিকাদারকে কোনো বিল দেওয়া হয়নি। প্রকল্পটি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মূলত সাঙ্গু নদীর মোহনা থেকে ৮০০ মিটার অংশে ভাঙন বেশি হয়েছে। মোহনায় চর জেগেছে। এ কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে তীব্র স্রোতে বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।
পাউবো সূত্র জানায় প্রকল্পের অধীনে ৮৮ দশমিক ৭০ হেক্টর বনায়ন, ১১ দশমিক ৫৮৫ কিলোমিটার সমুদ্র তীরবর্তী
বাঁধ পুনারাকৃতির ও ঢাল সংরক্ষণ কাজ হবে। এর মধো বাঁশখালী বাহারচড়া এক হাজার মিটার, খানখানাবাদে এক হাজার ৩১০ মিটার, ছনুয়ায় ২ হাজার ৮ শ মিটার, সাধানপুর ১ হাজার ১ শ মিটার, মোহনায় পুরাতন বাঁধ শক্তিশালীকরন ১ হাজার ৩ শ মিটার সমুদ্র তীর প্রতিরক্ষা ও সাঙ্গু নদী তীর রক্ষা কাজ হবে। আনোয়ারা অংশের রায়পুরে ২ হাজার ৭৭৫ মিটার, রায়পুরে ১ হাজার ২ শ মিটার, জুইদন্ডি ১ হাজার ২শ মিটার সমুদ্র তীর প্রতিরক্ষা ও উপকূলীয় বাধ পুনারাকৃতির ও ঢল সংরক্ষণ কাজ হবে।
বাঁশখালীতে ৫৮৮ কোটি ৮৩ লক্ষ ও আনোয়ারায় ৩১৯ কোটি দুই লক্ষ টাকায় ৩৪ টি প্যাকেজে হবে। গত ১৫ জুলাই প্রকল্পের জিও জারি হওয়ার পর প্রকল্প পরিচালক নিয়োগসহ দরপত্র আহ্বান করা হয়।মন্ত্রণালয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে বাঁশখালী আনোয়ারা বেড়িবাঁধ নৌবাহিনী বাস্তবায়ন করলে টেকসই ও মজবুত হবে বলে মনে করছেন উপকূলবাসী।
খানকানাবাদ ইউনিয়নের রায়ছটা এলাকার বাসিন্দা মো এনামুল হক বলেন,বাঁশখালীতে অতীতের বেড়িবাঁধ নির্মাণে হরিলুট হয়েছে। কদমরসুল প্রেমাশিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় ৩ শ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষের এক বছরের মধ্যে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরো প্রকল্প আওয়ামী লীগের সাবেক দুই চেয়ারম্যান
ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা লুটফট করেছে। প্রকল্পের কাজ নৌ বাহিনী করছে শুনে আনন্দ লাগছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিবর্তীতে নৌবাহিনী কাজ করলে বেড়িবাঁধ টেকসই ও মজবুত হবে।
দীর্ঘদিন কাজ আরম্ভ না হওয়ায় উপকূলবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এবারে যথাসময়ে কাজ শুরু করবেন বলে প্রত্যাশা রাখেন উপকূল তীরবর্তির এলাকার সাধারণ মানুষ।