নুর মুহাম্মদ, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি।।
পলিথিন বন্ধে সরকারের তোড়জোড়, তবু বন্ধ হয়নি ব্যবহার
কক্সবাজারের পেকুয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ পলথিন জব্দ করা হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে পেকুয়া চৌমুহনী এলাকায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নুর পেয়ারা বেগম ও পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা ইন্সপেক্টর মোঃ মুছাইবিল বীন রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এসময় অবৈধ পলথিন মওজুদ রাখা ও বিক্রয় এর দায়ে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৯৯৫ এর ১৫ (১) ৪ এর (খ) ধারায় পেকুয়া চৌমুহনী এলাকায় ভাই ভাই ষ্টোরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বাজারের জন্য পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের বিষয়ে বেশ সোচ্চার। অক্টোবরে সুপারশপ এবং নভেম্বর থেকে বাজারে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে সেটা সম্ভব হয়নি।
গত বছর নভেম্বর মাসের শুরু থেকে অভিযান পরিচালনা করার কথা থাকলেও বাস্তবে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ হয়নি। পলিথিন বিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে কোথাও কোথাও বাধার মুখেও পড়তে হয়েছে কর্মকর্তাদের।
সবজায়গাতেই দায় সারা অভিযান।
বাজার-হাটজুড়ে চলছে পলিথিনের ব্যবহার। প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারকদের স্পষ্ট বার্তা, হঠাৎ করে পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করা সম্ভব নয়। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগের পাশাপাশি এতে ঝুঁকিতে পড়বে অন্তত ৬ হাজারের বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠান। পলিথিনের জুৎসই বিকল্প না আসা পর্যন্ত, পরিবেশ সুরক্ষায় প্লাস্টিকের পুনঃব্যবহারে জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি স্থাপনা নির্মাণে শতভাগ ব্লক ব্যবহার করা হবে। ফলে অবৈধ ইটভাটাগুলো এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছিলেন সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পোড়া ইটের বদলে ব্লক ব্যবহারে উৎসাহিত করতে জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়। ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) বিল-২০১৩’ সংশোধনের জন্য সংসদে একটি বিল উত্থাপন করেন ওই মন্ত্রী । সংসদে সেই বিল পাস হওয়ার পর একই বছরের ২৪ নভেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) এর ধারা ৫(৩ক) এ দেয়া ক্ষমতাবলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মাটির ব্যবহার পর্যায়ক্রমে কমানোর উদ্দেশ্যে সব সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ভবনের দেয়াল ও সীমানা প্রাচির, হেরিং বোন বন্ড রাস্তা এবং গ্রাম সড়ক টাইপ-বি’র ক্ষেত্রে ইটের বিকল্প হিসেবে ২০২৫ সালের মধ্যে ব্লক ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
অথচ এখনো সরকারি স্থাপনায় ইট ব্যবহার হচ্ছে। লোক দেখানো অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান চালালেও কার্যত ফলাফল শূন্য। দেদারছে চলছে ইট ভাটার মহোৎসব।
বর্তমানে বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশে ব্লক তৈরি করছে ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান সিএসইবি, সিএসইবি ইন্টার লকিং, স্যান্ড সিমেন্ট হলো ব্লক, থার্মার ব্লক, স্যান্ডউইচ প্যানেল ও ফেরোসিমেন্ট চ্যানেলের মতো আধুনিক ব্লক তৈরি করছে।