১৯৯১ সালে হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা জীবন শুরুকরেছেন আনোয়ার হোসেন মামুন।এরপর একে একে কেটে গেছে প্রায় ৩৫ বছর।
গত ৩ জুলাই ছিল তার শিক্ষকতা জীবনের শেষ কর্মদিবস । প্রিয় শিক্ষককে ২৭ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর জনিত বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বর্তমান-প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
পবিত্র কুরআন, গীতা ও সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল আনুষ্ঠানিকতা।এরপর বিদায়ী শিক্ষককের উদ্দেশ্যে মানপত্র পাঠ করা হয়। তার হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মানসূচক ক্রেস্ট। শিক্ষার্থীরা বিদায়ী গানের মাধ্যমে প্রিয় শিক্ষকের স্মৃতিচারণ করেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নাসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের এড হক কমিটির সদস্য মোঃ জাহিদ হোসেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাসিম উদ্দিন বলেন একজন ভালো শিক্ষকের কোন বিদায় হয় না।
আনোয়ার হোসেন স্যার একজন ভালো মানুষ তার ভালো কর্ম ফলের কারণে তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন। শিক্ষার্থীদেরকে ভালো মানুষ হওয়ার আহব্বানো জানান তিনি
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ হারুনুর রশিদ ও কোহিনুর আক্তার এর যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য শাহেদ হোসেন। বক্তব্য রাখেন স্কুলের সহ প্রধান শিক্ষক মেহেদী মাসুদ, সুলতানা নার্গিস ও নাসরিন আক্ততার
স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক জামাল উদ্দিন সবুজ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম।
আর এইদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনোয়ার হোসেন মামুন স্যার আবেগঘন স্ট্যাটাসে লিখেছেন বিদায় প্রিয় ভালোবাসার শিক্ষালয়, হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয়।৩রা জুলাই ২০২৫ সালের শুভক্ষণে আমার শেষ কর্মদিবস। ভাবতেই কেমন আনমনা হয়ে যাই।দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছরের পথচলা।সেই ১৯৯১ থেকে আজ ২০২৫ সাল।
কত স্মৃতি জমা পড়েছে মানসপটে। কত কচিমুখ আজ পরিণত। স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে অত্যুজ্জ্বল। বর্তমান এবং অতীত মিলে আমার সান্নিধ্যে আসা প্রতিটি ছাত্রছাত্রীদের স্মৃতি ধারণ করেই আগামী জীবন বেঁচে থাকতে চাই।আমি প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই দেখেছিলাম অফুরন্ত সম্ভাবনা। শিক্ষাসংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্রে,ইংরেজি চর্চা,প্রমিত উচ্চারণ, দেয়ালিকা তৈরি এমন অনেক কাজেই সম্পৃক্ত ছিলাম।সেভাবেই আমি শ্রেণিতে তাদের উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেছিলাম এবং দিক নির্দেশনা দিয়েছিলাম।আজ আমি সত্যিই অনেক গর্বিত ও আনন্দিত এই ভেবে আমার প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় এবং সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্ব-মহিমায় প্রতিষ্ঠিত।
আমি চেয়েছিলাম নিভৃতচারী ও প্রচারবিমুখ হয়ে চুপিসারে বিদায় নিতে কিন্তু তোমরা ফেসবুকে আমার বিদায়ের দিনক্ষণ জানিয়ে দিয়েছ।তাইতো আবেগ ধরে রাখতে পারিনি।তোমাদের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে আমি ধন্য।অবসরকালীন বাকি জীবনে সুস্থতা ও নেক আমলের মধ্য দিয়ে যেন কাটাতে পারি তোমাদের কাছে সেই দোয়া প্রত্যাশা করছি।তোমাদের প্রতিও আমার দোয়া ও ভালবাসা থাকবে নিরন্তর।তোমাদের প্রিয় স্যার আনোয়ার হোসেন মামুন। আর এই লেখা ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়।
শিক্ষকতা জীবনের শেষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার সহকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ রহিম, মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন হেলাল, তানজিলা আক্তার, মোঃ ওয়াজেদ,শুভ্ররানী দে, ফোজিয়া আক্তার,হামিদা আক্তার রোজিনা আক্তার, মোঃ রেজাউল কাদের,মিজানুর রহমান, মোঃ রুবেল,জাহিদ হাসান আমেনা আক্তার,
সোনিয়া আক্তার,শারমিন আক্তার, হুমায়ুন কবির, বিদ্যালয়ের , প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষককে অশ্রুসজল নয়নে বিদায় দেন তারা। সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশের।












