সাতকানিয়ায় রোগী দেখতে চেম্বারে যাওয়ার সময় ফরহাদ কবির নামের এক ডাক্তারকে জরিমানা করার ঘটনায় ইউএনও মো. নজরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহারকৃত ইউএনও নজরুল ইসলামকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সাতকানিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল বশিরুল ইসলামকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আজ রবিবার (৪ জুলাই) বিকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত এক আদেশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সাতকানিয়া পৌরসভা এলাকায় রোগী দেখতে চেম্বারে যাওয়ার সময় ডা. ফরহাদ কবির নামের এক চিকিৎসকের কাছ থেকে এক হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এসময় ডা. ফরহাদ কবির লকডাউনে চিকিৎসকদের চলাচলে বিধি-নিষেধ না থাকার বিষয়টি ইউএনওকে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ডাক্তারদের সম্পর্কে নানা ধরনের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।
এক পর্যায়ে ইউএনও মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “আমি চাইলে আপনাকে (ডা. ফরহাদ কবির) জেল দিতে পারি। তা করলাম না। দ্রুত জরিমানা দিয়ে দেন।” তখন বাধ্য হয়ে ডা. ফরহাদ কবির এক হাজার টাকা জরিমানা দেন।
এদিকে, ঘটনার পরদিন ডা. ফরহাদ কবিরের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের বিষয়টি স্বাচিপ’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীরকে জানান।
পরে বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর ডাক্তারের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের বিষয়টি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে জানান।
এছাড়া ঘটনার বিষয়ে দৈনিক আজাদী সহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
আজ রবিবার বিকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সাতকানিয়ার ইউএনও মো. নজরুল ইসলামকে প্রত্যাহারের আদেশ দেন।
এ নিয়ে সিটিনিউজ২৪.টিভিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর ইউএনওর এমন কাণ্ডে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদসহ অনেক চিকিৎসকদের মাঝে ক্ষোভ আর চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদের দাতা সদস্য ইঞ্জিঃ মোঃ জাবেদ আবছার চৌধুরী বলেন দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যে সকল স্বাস্থ্যকর্মী লড়ছেন এবং দেশবাসীকে সুরক্ষিত রাখতে যাঁরা মারাত্মক এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছেন প্রতিনিয়ত, তাঁদের প্রতি এমন আচরন হতাশাব্যঞ্জক । সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নজর রাখবেন বলেও তিনি আশা করেন।
আর এদিকে চিকিৎসক হয়রানির অভিযোগ এনে এর সুরাহা পেতে জেলা সিভিল সার্জনের হস্তক্ষেপের দাবিও তোলেন চিকিৎসক নেতারা। এসবের মধ্যেই হঠাৎ ওএসডি হলেন সাতকানিয়ার ইউএনও।
এই বিষয়ে কথা বলতে সাতকানিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।