শুক্রবার, ৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Add Your Heading Text Here

চলিত মাসেই ট্রেন চলাচলের উপযোগী কালুরঘাট সেতু

Add Your Heading Text Here

Add Your Heading Text Here

মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর।

নভেম্বর মাসে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাবে ট্রেন। কালুরঘাট সেতু সংস্কার ছাড়া এই রেলপথে হাই লোডের ইঞ্জিনবাহী ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ নভেম্বর নবনির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। তার আগেই কালুরঘাট সেতু সংস্কার করে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করার কাজ চলছে।

 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পরামর্শক দলের পরামর্শে গত ১ আগস্ট থেকে ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয়। সংস্কার কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রেলপথ বসানোর কাজ।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত পূর্বকোণকে বলেন, ‘বুয়েট পরামর্শক দলের পরামর্শ অনুযায়ী সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। তারা নিয়মিত সংস্কার কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন। গতকাল শুক্রবারও সংস্কার কাজ দেখে গেছেন। এই অক্টোবর মাসেই ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী হয়ে যাবে কালুরঘাট সেতু।’ তিনি আরও বলেন, ‘বুয়েট পরামর্শক দল সেতুর অবকাঠামোগত যেসব সমস্যা চিহ্নিত করেছিলেন তা সারিয়ে মজবুত করা হচ্ছে। কাজ চলমান রয়েছে।’

 

 

জানা গেছে, বিট্রিশ আমলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে ট্রেন চলাচলের জন্য কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় সেতু পারাপারে ট্রেনের গতিবেগ কমিয়ে আনা হয়। সেতু পারাপারের সময় ট্রেনের গতিবেগ রাখা হয় সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, কক্সবাজার রেলপথে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দ্রুত গতির ভারী ইঞ্জিনের ট্রেন চলাচল করবে। সংস্কার ছাড়া কালুরঘাট সেতু দিয়ে এ ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে বুয়েট প্রকৌশলীদের পরামর্শ চাওয়া হলে তারা সেতুর বেশ কয়েকটি বড় ধরনের ত্রুটি চিহ্নিত করেন। প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি সংস্কার করা হচ্ছে।

 

 

এ সেতুর সংস্কার কাজের জন্য চলতি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত সকল প্রকার যানবাহন পারাপার বন্ধ ঘোষণা করে রেলওয়ে। এর বিকল্প পথ হিসেবে সেতুর পাশে কর্ণফুলী নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

১৯৩১ সালে কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট রেল চলাচলের জন্য ৬৩৮ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। ডেক বসিয়ে রেল সেতুটিকে অন্যান্য যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হয়। এরপর ১৯৬২ সালে যান চলাচল শুরু হয়। এর আগে দুইবার সংস্কার করা হয়েছিল।

 

 

গতকাল (শুক্রবার) সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে প্রায় মাঝামাঝি পর্যন্ত সেতুর ডেক খুলে ফেলা হয়েছে। অবকাঠামোগত বিভিন্ন অংশের কাজ চলমান রয়েছে। প্রায় ৩০০ মিটার রেল ট্র্যাক বসানো হয়ে গেছে। এসময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত লোকজন জানান, দিনরাত সমান সংখ্যক শ্রমিক সংস্কার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। বুয়েট বিশেষজ্ঞ দল ও রেলওয়ের প্রকৌশলীরা নিয়মিত পরিদর্শন করছেন। সেতুটি সংস্কারের পর ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা বলেন, ‘কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ কয়েকটি ধাপে এগিয়ে চলছে। এরমধ্যে মূল কাজ হলো সেতুটির অবকাঠামো মজবুত করে তোলা। যা চলমান রয়েছে। আরেকটি ধাপ হচ্ছে রেলপথ বসানো। এছাড়া সেতুতে পথচারী চলাচলের জন্য পথ তৈরির কাজ। কাজের গতি সন্তোষজনক জানিয়ে তিনি বলেন, চলতি মাসেই ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী হয়ে যাবে।’

শেয়ার করুন