পবিত্র শবেবরাত নিয়ে বিস্ফোরক ‘বাজে’ কটুক্তি করে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত এক ইসলামী বক্তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে তদন্ত করে একমাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবিরের আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের সদস্য ফুয়াদ বিন হাকিম।
এই মামলায় আসামি করা হয়েছে- ইহইয়া-উস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক শাইখ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম মাদানীকে। তিনি রাজধানীর উত্তরখান থানার মৈনারটেক এলাকার বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত বছর ‘Da’wah Tv Network’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে কুরআন সুন্নাহার মানদণ্ডে শবে বরাত ও শাবান শিরোনামে একটি ভিডিও আপলোড করা হয়। ওই ভিডিওর মধ্যে পবিত্র শবেবরাত নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ ওয়াজ করা হয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিবাদীর ‘Islamic Dowa 24’ নামে ইউটিউব চ্যানেল থেকে ওই বিতর্কিত ওয়াজসহ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। একইদিন বিবাদীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও আপলোড করা হয়। সেই ভিডিওতেও পবিত্র শবেবরাত নিয়ে ‘কটুক্তি’ করে ওয়াজ করা হয়।মামলায় বিবাদি দীর্ঘদিন ধরে কুরআন সুন্নাহ মোতাবেক করা আমলকারীদের বেদাতি বলে কটাক্ষ করে আসছেন উল্লেখ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর ২৮ ও ৩১ ধারায় অভিযোগ আনেন বাদী।
মামলার বাদী ফুহাদ বিন হাকিম বলেন, জনৈক আলেম আকরামুজ্জামান পবিত্র শবেবরাতে মসজিদে ইবাদত না করে বেশ্যালয়ে যাওয়া উত্তম বলেছেন। এটা শুনে আমি একজন মুসলমান হিসেবে অত্যন্ত আহত হয়েছি। সেজন্য আমি বাদী হয়ে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
লেখক-সংগঠক যিকরু হাবিবীল ওয়াহেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, পবিত্র শবে বরাত রজনী মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ রাত্রি। পবিত্র হাদিস শরীফে এই রাতকে ভাগ্য রজনী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন একটি মহিমান্বিত রাতে মসজিদে ইবাদত না করে বেশ্যালয়ে যাওয়া উত্তম বলেছেন জনৈক আক্রাম নামক কথিত আলেম, তাও মসজিদে দাঁড়িয়ে। তার এমন বক্তব্যে কোটি মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মামলার শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক, জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ ইফতেখার সাইমূন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইকবাল হাসান, এডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ, অ্যাডভোকেট এডিএম আরুছ, অ্যাডভোকেট ফজলুল সাব্বির অভি, অ্যাডভোকেট এমরান হোসেন, অ্যাডভোকেট হুসাইন আল মাহমুদসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।