মুহাম্মদ মহিউদ্দিন।।
বাঁশখালীতে বন বিভাগের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র পরিণত হয়েছে । সোমবার ৯ ডিসেম্বর বিকেল ৫ টায় সরল ইউনিয়নের পশ্চিম সরল চরপাড়া বেড়িবাধ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় দুই গ্রুপের অন্তত ৫০ জন হতাহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ ৫ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।।
স্থানীয় বাসিন্দা ডাক্তার মন্নান বলেন, সরল ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মনসুর গ্রুপ ও কবির আহমদ গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বন বিভাগের খাস জমি দখল নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধ নিষ্পত্তিতে বহুবার স্থানীয়ভাবে সালিশি বৈঠক হলেও কোন পক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। আমি নিজেও একজন স্থানীয় সালিশকার হিসেবে ছিলাম। উভয়পক্ষ সালিশ মানতে রাজি না, নিজেদের শক্তি সামর্থ্য দেখাতে প্রস্তুত।
স্থানীয়দের বরাতে জানা যায় বিরোধের জের ধরেই সাবেক ইউপি সদস্য মনসুর আহমদ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহাদাত কবির মানিকের নেতৃত্বে একদল লোক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চরপাড়া বেড়িবাধ এলাকায় জড়ো হয়। এই সময় দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হয়। এই ঘটনায় কবির আহমদ গ্রুপের গুলিবিদ্ধ ৫ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ ৫ জন হলেন সরল ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আহমাদুল্লাহ ছেলে জয়নাল আবেদীন (২৬), একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর পুত্র মো: জাবেদ (২১),নুরুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জামাল উদ্দিনের ছেলে নেজাম উদ্দিন ( ৩২), মৃত আব্দুল সোবহানের ছেলে শামসুল ইসলাম (৫৮), লোকমানের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল (৫০) প্রকাশ লাদেন।
অপরদিকে মনছুর গ্রুপের মৃত বশির আহমদের ছেলে আব্দুল খালেক (৩৮) ও ফকির আহমদের ছেলে মিনহাজ উদ্দিন (২৫) আহত হয়ে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই ঘটনায় আহত কবির আহমদ গ্রুপের জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা জায়গাটি ভোগ দখলে থেকে দীর্ঘদিন ধরে লবণ চাষ ও চিংড়ি ঘের করে আসছি। হঠাৎ মনসুর গ্রুপের লোকজন পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
বাঁশখালী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরী বিভাগে কর্মরত ডাক্তার জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, সরল এলাকায় লবণের মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৫ জনকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অপর ১ জনকে তৎকালে হাসপাতালে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।
এই ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, বন বিভাগের জায়গায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে বলে শুনেছি । তবে এই বিষয়ে কোন পক্ষই এখনো অভিযোগ দায়ের করেননি। লিখিত অভিযোগ ফেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদটির পাঠক সংখ্যা : ৯