বৃহস্পতিবার, ৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ভোগান্তির ৩০ ঘন্টা কর্মবিরতি পর ঘুরল ট্রেনের চাকা

মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধি।

ভোগান্তির ৩০ ঘন্টা কর্মবিরতি পর ঘুরল ট্রেনের চাকা

ভোগান্তির কর্মবিরতির পর বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ছয়টা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। সকালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও কমলাপুর থেকে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। আটটার দিকে চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস কমলাপুর থেকে ছেড়ে গেছে।

এছাড়া বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৬টা ৫ মিনিটে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস। এরপর ৬ টা ৫০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়েছে মধুমতি এক্সপ্রেস এবং ৭টায় বনলতা এক্সপ্রেস। রেলওয়ে সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, দাবি পূরণের আশ্বাসে রেলওয়ের রানিং স্টাফরা ৩০ ঘন্টা পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়। মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক-সুবিধা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন রানিং স্টাফরা।
গত ২২ জানুয়ারি চট্টগ্রামে পুরোনো রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার শর্ত দেয় রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন। অন্যথায় ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা।রানিং স্টাফরা হলেন গার্ড, ট্রেনচালক (লোকোমাস্টার), সহকারী চালক ও টিকিট পরিদর্শক (টিটিই)। তারা সাধারণত দীর্ঘ সময় ট্রেনে দায়িত্ব পালন করেন। দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসেবে বাড়তি অর্থ পেতেন তারা। এ ছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো। তবে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর এই সুবিধা সীমিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
দাবি পূরণ না হওয়ায় গত সোমবার মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতি শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি। সে কারণে গতকাল মঙ্গলবার দিনভর সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। স্টেশনে এসে ট্রেন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন আগাম টিকেট কাটা শত শত যাত্রী। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের ভাঙচুর, স্টেশন মাস্টারকে আটকে রাখাসহ নানা তুঘলকি ঘটনাও ঘটে।
কর্মবিরতি প্রত্যাহারের জন্য সরকারের তরফ থেকে বারবার রেলকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হলেও কাজ হয়নি। বিষয়টি নিয়ে গতকাল দিনভর দফায় দফায় বৈঠক হলেও রেলের রানিং স্টাফরা অবস্থান থেকে সরেননি। দাবি আদায়ে অনড় ছিলেন তারা। দিনভর বৈঠকের নানা নাটকীয়তা শেষে মঙ্গলবার গভীর রাতের বৈঠকে দাবি পূরণের আশ্বাস আসে। যে বৈঠকে দিনভর আড়ালে থাকা আন্দোলনকারীদের নেতা হাজির হন। রেল উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতির পর মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটায় কর্মসূচি তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।
রাত আড়াইটায় বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় কথা দিয়েছেন, বুধবারের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দ্রুত আমাদের বিষয়টি সমাধান করবেন। আগে আমরা যেসব সুবিধা পেয়েছি, সেসব বহাল থাকবে। আমরা এখন থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিলাম। রানিং স্টাফ ভাইদের বলব, তারা যেন কাজে ফিরে যান।

আরও পড়ুন  বিলুপ্ত হচ্ছে পৌরসভা!

এর আগে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের বেইলি রোডের বাসায় বৈঠক হয়। উপদেষ্টার বাসায় দুই প‌ক্ষের মধ্যস্থতা বৈঠকে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও বিএন‌পির চেয়ারপারস‌নের বি‌শেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস।

শেয়ার করুন