শুক্রবার, ৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Add Your Heading Text Here

অবশেষে দ.হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান হলেন মোখতার আহম্মদ

Add Your Heading Text Here

Add Your Heading Text Here

অবশেষে দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৭ই মার্চ, ২০২৫ইং, সোমবার দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক মোখতার আহম্মদ।
উল্লেখ্য, নং:০৫.৪২.২০০০.০১৪.২০.০১১.০২.২৫-২৯ স্মারক মুলে স্কুল কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরী (অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার-রাজস্ব) ১৬ই মার্চ, ২০২৫ইং তারিখে মোখতার আহম্মদকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেন।

প্রতিষ্ঠানটির নানান অনিয়ম দূর্নীতিতে বৈষম্যমূলক কার্যকলাপে ভরপুর।
প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ছিল জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ অনুসরণ না করে সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল ওসমান গনি কে। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ সময় যাবৎ কোন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বিদ্যালয় কর্তৃক গত বছরের ১২ জুন তারিখের অভিভাবক প্রতিনিধি নাসির উদ্দিন, সৈয়দ আনোয়ারুল করিম, শিক্ষক প্রতিনিধি শুভাশিস নন্দী এবং ওসমান গনি কর্তৃক গঠিত আর্থিক নিরীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৯ হতে সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত শুধু বিদ্যালয়ের নগদ ব্যাংকে জমা এবং ব্যায়ের খাতেই ৩৯ লক্ষ টাকার অসঙ্গতি পাওয়া যায়। ৩৯ লক্ষ টাকা বিদ্যালয়ের স্বার্থে স্বীকারোক্তিপূর্বক আদায় করতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিযুক্ত কমিটির সুপারিশ করার সত্ত্বেও তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেলিম আফজল এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজল করিম দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। রিপোর্টে বলা হয়েছে ২০১৯ সালের পূর্বে ১০ বছরে কোটি টাকার বেশি আর্থিক অসংগতি থাকতে পারে। সরকারি বা স্বীকৃত কোন সিএ ফার্মের মাধ্যমে অধিকতর তদন্তের জন্য সুপারিশ করে তিনজন সদস্য নিরিক্ষার উপরে স্বাক্ষর করলেও সম্প্রতি বেআইনিভাবে নিয়োগকৃত সহকারী প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি স্বাক্ষর করেননি। মূলত এই নিয়োগ সেই আর্থিক অসঙ্গতিকে আড়াল করার লক্ষ্যে দেওয়া হয়েছিল।

এই সব অভিযোগের বিরুদ্ধে চলিত বছরের ২২ জানুয়ারি দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের ব্যানারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বৈষম্য দূরীকরণে ন্যায়ভিত্তিক নিয়োগ সহ চার দফা দাবি নিয়ে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা স্কুলের সামনে প্রধান সড়কে মানববন্ধন সহকারে প্রতিবাদ জানায়।

জ্যেষ্ঠতা মোতাবেক দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদানের জন্য চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড বহুবার নির্দেশনা প্রদান করলেও তা মানা হয়নি।
এছাড়া গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর এবং চলিত বছরের ২১ জানুয়ারি ২৫ ইংরেজি তারিখে পরপর দুইবার জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীষা জ্যেষ্ঠতা ভিত্তিতে মোখতার আহমদকে প্রধান শিক্ষক পদের দায়িত্ব প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বপ্রাপ্ত স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি রাকিবুল ইসলামকে অনুরোধ করা হলেও। আজ নয় কাল সময় ক্ষেপণ করে কোন এক অদৃশ্য কারণে তিনি ও তা করেন নি।

এরই মধ্যে কালক্ষেপণ করে অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়া ওসমান গনির আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন দুর্নীতিবাজ চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম টাকার বিনিময়ে বিদ্যালয় পরিদর্শক ডক্টর বিপ্লব গাঙ্গুলী স্বাক্ষরিত এক চিটি মারফৎ গত ২২ জানুয়ারি ২৫ তারিখে ইঞ্জিনিয়ার মুনতাসির কাদেরকে সভাপতি করে চার সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি ঘোষণা দেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রাম।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম অবসরে যাওয়ার একদিন আগেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রাম এর বিদ্যালয়ের পরিদর্শক প্রফেসর ডঃ বিপ্লব গাঙ্গুলী গত ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ সূত্রোক্ত
“খ” নির্দেশনা মোতাবেক সিনিয়র শিক্ষক মোকতার আহমদ কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করে প্রমাণিক সাত দিনের মধ্যে মাধ্যমিকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রাম বিদ্যালয়ের পরিদর্শক দপ্তরে দাখিল করার জন্য এডহক কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুনতাসির কাদেরকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। যদি এর ব্যর্থই ঘটে তাহলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাত দিন পেরিয়ে ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও মোকতার আহমদকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেননি এডহক কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুনতাসির কাদের। প্রফেসর ডক্টর বিপ্লব গাঙ্গুলীর যেই কথার সেই কাজ মোকতার আহমদকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় অর্থাৎ শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা পালন না করায় ১৪ দিনের মাথায় দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি বাতিল ঘোষণা করেন তিনি।

এর পরেই মোকতার আহমদের প্রধান শিক্ষক হওয়ার দরজা খুলে যায়। ১৫ মার্চ ২৫ ইংরেজি তারিখে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব প্রদান করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার-রাজস্ব মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরীকে। দায়িত্ব নেওয়ার একদিনের মাথায় তিনি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেন সিনিয়র শিক্ষক মোকতার আহমদকে।

অবসরে যাওয়ার পূর্বেই একদিনের জন্য হলেও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিতে চান
মোকতার আহমেদ।সেই লক্ষ্যে দীর্ঘদিন সংগ্রাম করার পাশাপাশি,অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছিলেন তিনি। ইতিমধ্যে মোকতার আহমদ জ্যেষ্ঠতা ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন। জানা যায়, তিনি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে অবসরের যাবেন।

মোকতার আহমদ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণের পর অনুভূতি জানতে কথা হয় “citynewstv24 com ” প্রতিবেদকের সাথে তিনি জানান, আমি এক নম্বর সিনিয়র ও যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়া সত্বেও আমাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব না দিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওসমান গনিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এতদিন আমার প্রতি অন্যায় ও অবিচার করা হয়েছিল । দেরিতে হলেও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অন্যায় পরাজিত হয়েছে।

দায়িত্ব গ্রহণের পর তাৎক্ষণিক ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ ও অভিভাবকবৃন্দ।প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ শাহেদ, জামাল উদ্দিন, মাসুম হোসাইন, জিয়াউর রহমান ইলিয়াস হোসাইন, হারুনুর রশিদ প্রমূখ।অভিভাবকবৃন্দদের পক্ষ হতে উপস্থিত ছিলেন হারুনুর রশিদ, মোহাম্মদ শরিফ, শফিউল আজম, মোহাম্মদ আজম প্রমূখ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ার (অব.) আবু সিদ্দিক, এবং সবাজসেবক জনাব মজিবুল হক বকুল, ও জনাব হাসান রাসেল প্রমূখ।

শেয়ার করুন