শুক্রবার, ৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Add Your Heading Text Here

চট্টগ্রামে যোগ দিলেন নতুন জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান

Add Your Heading Text Here

Add Your Heading Text Here

 

চট্টগ্রাম জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রকাশ বিলাস। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেওয়া চাঁদপুরের সন্তান তিনি। আজ ৭ ডিসেম্বর বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। আর বিদায়ী জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম ত্যাগ করেছেন।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন জেলায় জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। এর আগে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ‘নিয়োগ-পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগ’ এর উপসচিব পদে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে ঢাকার জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ছিল চট্টগ্রামের তাঁর শেষ কর্মদিবস। গত বছরের ৩ জানুয়ারি তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনে যোগ দিয়েছিলেন।
নতুন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রকাশ বিলাসের বাবা মরহুম মো.সফিউল্যা মিয়া ছিলেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে তিনি ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। গ্রাম থেকে গ্রামান্তরের মানুষের সাথে মেশার সুযোগ পেয়েছেন বলেই মানুষকে খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করা সুযোগ হয়েছে ২৪তম বিসিএস’র প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তার।
কথোপকথনে তিনি বলেন, মানুষের সাথে না মিশলে, মানুষকে না বুঝলে কিংবা মানুষকে চিনতে না পারলে কখনোই প্রশাসক হওয়া সম্ভব না। মানুষের সাথে মিশতে হবে-তাকে বুঝতে হবে। ঐতিহ্যগত ভাবেই চট্টগ্রামের মানুষের মন অনেক বড়।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার কারণে দীর্ঘ একটা সময় এই চট্টগ্রামের মানুষের সাথে চলাফেরা-মেশার সুযোগ পেয়েছিলাম, সে কারণে চট্টগ্রামের প্রতি অন্যরকম একটা মায়া আছে আমার। যে মায়া আমাকে চট্টগ্রামের মানুষের সেবা করার জন্য টেনে এনেছে।
তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ-এই চট্টগ্রামের মানুষকে সেবা করার সুযোগ তিনিই আমাকে দিয়েছেন।
মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান আরও বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সরকার নানানমুখি উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এই চট্টগ্রামের মানুষের প্রতিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক বেশি দুর্বল। যে কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বড় বড় কয়েকটি প্রকল্প তিনি এই চট্টগ্রামবাসীকে উপহার দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সেদিন আর খুব বেশি দূরে নয় যেদিন পাহাড়ের মানুষ রেল চড়ে সমুদ্র দেখতে কক্সবাজার যাবে। এই প্রকল্পও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করেছেন চট্টগ্রামের মানুষের জন্য, চট্টগ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য।
২৪তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে ২০০৫ সালে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদে নড়াইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগদান করেন আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বিলাস। দীর্ঘ ১৭ বছরের চাকরিকালে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঝিনাইদহ ও ঢাকাতে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া সিনিয়র সহকারী সচিব ও উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বিদ্যু বিভাগে। বিদ্যু, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এমপি’র একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষা জীবনে তিনি হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হন। ২০০১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএ-তে ভর্তি হন। চাকরির পাশাপাশি নৈশকালীন এমবিএ সম্পন্ন করেন ২০১১ সালে।
এছাড়া তিনি অস্ট্রেলিয়া সরকারের বৃত্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স ইন ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণ করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি শিক্ষার্থী হিসেবে অধ্যয়ন করছেন-যা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ব্যক্তি জীবনে দুই সন্তানের জনক তিনি। তাঁর স্ত্রী তানজিয়া রহমান একজন সাইকোলজিস্ট ও কগনিটিভ বিহেবিয়ার থেরাপিস্ট (সিবিটি) প্র্যাকটিশনার। তিনি ঢাকার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

#সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল ফেসবুক আইডি থেকে

শেয়ার করুন