মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর ।।
রেলের রন্দ্রে রন্ধ্রে সীমাহীন দুর্নীতি ঠাকাতে সেনাবাহিনী থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের খবরে কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই চিন্তা ভাবনা থেকে সরে আসার দাবিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে অবস্থিত সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (সিসিএস) দপ্তরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক ঐক্য জোটের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধন কর্মসূচিতে তারা সচল রেলকে অচল করার হুমকি দেন ।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০ টা হতে ১১টা পর্যন্ত প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক ঐক্য জোট।
মানববন্ধনে কর্মকর্তা কর্মচারীরা বলেন, রেলের নির্ধারিত ক্যাডার থেকে মহাপরিচালক, মহাব্যবস্থাপক, প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক রেল অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের দ্বারাই পরিচালিত হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক বাহির থেকে কর্মকর্তা এনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে রেলওয়ে পরিচালনার মতো আত্মঘাতী চিন্তা ভাবনা থেকে সরে না এলে, সচল রেল অচলে দায়ভার রেল উপদেষ্টা, সচিব, আমলাদের নিতে হবে।
কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানান, রেলেওয়ের নির্ধারিত ক্যাডার থেকে মহাপরিচালক (ডিজি), পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম), প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (সিসিএস) পদে সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল পদের কর্মকর্তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের চিন্তাভাবনা চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ফলে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে রীতিমতো আতঙ্ক শুরু হয়েছে।
এ নিয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সিসিএস দপ্তরে ক্রয় সহ সর্বক্ষেত্রে জড়িত ঠিকাদাররাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।কর্মকর্তা কর্মচারীরাই ঠিকাদারদের এ নিয়ে উস্কানি দিচ্ছে। এমন অভিযোগ মিলেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা। গণমাধ্যম কর্মীদের মতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীরা রেলের সার্বিক কাজে ব্যাপক দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছে। আর্মি নিয়োগে দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এমনকি রেলওয়ে কে অচল করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
এতে সভাপতিত্ব করেন আমিরুজ্জামান, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেলওয়ে, শ্রমিক ঐক্য জোটের মূখপাত্র, এডভোকেট এম আর মঞ্জু ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মো. জিয়াউর রহমান, মো. কামাল হোসেন, তামান্না বিনতে আজাদ, আনিসুর রহমান, শাহাদাত হোসেন, লোকমান হাকিম অলিউল হাসান, আবু তালেব, উম্মে কুলসুম, নুর জাহান, আয়শা সিদ্দিকা প্রমুখ।
বক্তারা আরোও বলেন রেলওয়ে ক্যাডারের বাইরে অন্য কাউকে ডিজি, জিএম এবং সিসিএস হিসেবে রেলওয়ে শ্রমিক ঐক্য জোট মেনে নেবেন না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। যদি তাদের এ দাবি মানা না হয় তাহলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলে জানান বক্তারা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফকির মো. মহিউদ্দীন এবং বিসিএস রেলওয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রান্সপোর্টেশন অ্যান্ড কমার্শিয়াল অফিসার্সের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে রেলওয়েকে সরকারের একটি বিশেষায়িত কারিগরি প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে একই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য জোট। জোটের সমন্বয়ক এম আর মনজু স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি গত মঙ্গলবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এতে বাংলাদেশ রেলওয়েকে একটি বিশেষায়িত কারিগরি প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে বলা হয়েছে-‘রেলের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালন পদ্ধতি দেশের অন্য যে কোন প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ভিন্নতর। বিসিএস রেলওয়ে (প্রকৌশল এবং লেওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্য) ক্যাডার থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ডিজি নিয়োগ দীর্ঘদিনের রীতি।
সংবাদটির পাঠক সংখ্যা : ৪