চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানা গন্ডামারা ইউনিয়নের কৃতি সন্তান ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী
লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানায় সোমবার (৮ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
ইতিপূর্বে ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী নোয়াখালীর চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন।
শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) ওই থানা থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর সারা দেশের মতো চাটখিলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ে। আগুনে পুড়ে যাওয়া থানা ভবন, যানবাহন-শূন্য অবস্থা, ভীত ও মনোবলহীন পুলিশ সদস্য—সব মিলিয়ে ছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেই পরিস্থিতিতেই ৩০ আগস্ট ২০২৪ সালে অফিসার ইনচার্জ হিসেবে চাটখিল থানায় যোগ দেন ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী।
দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি একটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত থানার পরিস্থিতি দেখতে পান—চেয়ার, টেবিল, কাগজ-কলম, গাড়ি, এমনকি অফিসার-ফোর্সদের থাকার মতো জায়গাও ছিল না। মনোবল হারানো পুলিশ সদস্যদের পুনরায় সংগঠিত করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনাই ছিল তাঁর প্রথম চ্যালেঞ্জ।
ক্রমে তিনি পুলিশ-জনতার দূরত্ব কমিয়ে “পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ”—এই মূলমন্ত্রকে বাস্তবে রূপ দেন। স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় থানার অবকাঠামো উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নিরলসভাবে কাজ করেন এই কর্মকর্তা। তাঁর নেতৃত্বে চাটখিল থানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও দৃঢ় হয়, কমে অপরাধের মাত্রা, এবং এলাকায় ফিরে আসে স্বাভাবিক পরিবেশ।
তার বিদায়ে চাটখিলের সাধারণ মানুষ, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃতজ্ঞতা ও শুভকামনা জানাচ্ছেন। অনেকেই বলছেন—চাটখিল থানায় শৃঙ্খলা ও আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার পেছনে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
স্থানীয়রা মনে করেন চাটখিলের প্রতি এক বছরেরও বেশি সময়ের নিবেদিত সেবার পর দায়িত্ব হস্তান্তর করে চলে গেলেন ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী; রেখে গেলেন দায়িত্বশীলতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়ে ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রামগঞ্জের মানুষের কল্যাণে প্রশাসনিক সেবাকে আরো গতিশীল ও জনবান্ধব করতে নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে চাই। সরকারের আইনীয় সকল সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন “গত ৫ আগস্টের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ চাটখিল থানায় আমার পদায়ন হয়। ৩০ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে যোগদানের পর থানাটি বিধ্বস্ত অবস্থায় পাই। কোনো সরঞ্জাম, কোনো পরিবেশ, এমনকি মনোবলও ছিল না। একদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অন্যদিকে থানার অবকাঠামো দাঁড় করানো—দুই দিকেই আমাকে মনোযোগ দিতে হয়েছে।
চাটখিলবাসীর সহযোগিতায় আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সফলতা যদি কিছু থাকে, তার পুরো কৃতিত্ব চাটখিলের মানুষের, আমার সহকর্মীদের এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। ব্যর্থতা যেটুকু, সেটুকু আমার। ১ বছর ২ মাস ৭ দিনের কর্মকালে আমি সবার সহযোগিতা পেয়েছি। সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আজ চাটখিল থানা থেকে বিদায় নিলাম। ভালো থাকুক প্রিয় চাটখিল উপজেলায় বাসী।”












